[go: nahoru, domu]

বিষয়বস্তুতে চলুন

খেজুর: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
202.134.14.158 (আলাপ)-এর সম্পাদিত 5277129 নম্বর সংশোধনটি বাতিল করা হয়েছে
ট্যাগ: পূর্বাবস্থায় ফেরত
সংশোধন
 
(১৪ জন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত ৩৩টি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
১৪ নং লাইন: ১৪ নং লাইন:
|binomial = ''Phoenix dactylifera''
|binomial = ''Phoenix dactylifera''
|binomial_authority = [[কার্ল লিনিয়াস|এল.]]
|binomial_authority = [[কার্ল লিনিয়াস|এল.]]
|synonyms_ref = <ref>[http://www.theplantlist.org/tpl1.1/record/kew-152659 The Plant List, ''Phoenix dactylifera'' L. ]</ref>
|synonyms_ref = <ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |ইউআরএল=http://www.theplantlist.org/tpl1.1/record/kew-152659 |শিরোনাম=The Plant List, ''Phoenix dactylifera'' L. |সংগ্রহের-তারিখ=২৬ এপ্রিল ২০২১ |আর্কাইভের-তারিখ=১৭ এপ্রিল ২০১৯ |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20190417123456/http://www.theplantlist.org/tpl1.1/record/kew-152659 |ইউআরএল-অবস্থা=অকার্যকর }}</ref>
|synonyms = * ''Palma dactylifera'' <small>(L.) Mill.</small>
|synonyms = * ''Palma dactylifera'' <small>(L.) Mill.</small>
* ''Phoenix chevalieri'' <small>D.Rivera, S.Ríos & Obón</small>
* ''Phoenix chevalieri'' <small>D.Rivera, S.Ríos & Obón</small>
২০ নং লাইন: ২০ নং লাইন:
|}}
|}}


'''খেজুর''' ({{lang-sa|खर्जूरम्|खर्जूरम्}}); ({{lang-en|Date Palm}})<ref name=GRIN>{{GRIN | access-date = 10 December 2017}}</ref> এক ধরনের [[তাল|তালজাতীয়]] শাখাবিহীন বৃক্ষ। এর [[বৈজ্ঞানিক নাম]] <u>ফিনিক্স</u> <u>ড্যাকটিলিফেরা</u> (''Phoenix dactylifera'')। মানব সভ্যতার ইতিহাসে সুমিষ্ট [[ফল]] হিসেবে এর গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ায় অনেক বছর পূর্ব থেকেই এর চাষাবাদ হয়ে আসছে। এ গাছটি প্রধানতঃ মরু এলাকায় ভাল জন্মে। খেজুর গাছের ফলকে খেজুররূপে আখ্যায়িত করা হয়। মাঝারি আকারের গাছ হিসেবে [[খেজুর গাছ|খেজুর গাছের]] উচ্চতা গড়পড়তা ১৫ মিটার থেকে ২৫ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। এর লম্বা পাতা রয়েছে যা পাখির পালকের আকৃতিবিশিষ্ট। দৈর্ঘ্যে পাতাগুলো ৩ থেকে ৫ মিটার পর্যন্ত হয়। পাতায় দৃশ্যমান পত্রদণ্ড রয়েছে। এক বা একাধিক বৃক্ষ কাণ্ড রয়েছে যা একটিমাত্র শাখা থেকে এসেছে।
'''খেজুর''' এক ধরনের [[তাল|তালজাতীয়]] শাখাবিহীন বৃক্ষ। এর [[বৈজ্ঞানিক নাম]] ''ফিনিক্স ড্যাকটিলিফেরা'' (''Phoenix dactylifera'')। মানব সভ্যতার ইতিহাসে সুমিষ্ট [[ফল]] হিসেবে এর গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ায় অনেক বছর পূর্ব থেকেই এর চাষাবাদ হয়ে আসছে। এ গাছটি প্রধানত মরু এলাকায় ভাল জন্মে। খেজুর গাছের ফলকে খেজুররূপে আখ্যায়িত করা হয়। মাঝারি আকারের গাছ হিসেবে [[খেজুর গাছ|খেজুর গাছের]] উচ্চতা গড়পড়তা ১৫ মিটার থেকে ২৫ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। এর লম্বা পাতা রয়েছে যা পাখির পালকের আকৃতিবিশিষ্ট। দৈর্ঘ্যে পাতাগুলো ৩ থেকে ৫ মিটার পর্যন্ত হয়। পাতায় দৃশ্যমান পত্রদণ্ড রয়েছে। এক বা একাধিক বৃক্ষ কাণ্ড রয়েছে যা একটিমাত্র শাখা থেকে এসেছে।


পুষ্টি উপাদান
পুষ্টি উপাদান
৪৮ নং লাইন: ৪৮ নং লাইন:
[[প্রস্তর যুগ|প্রস্তর যুগে]] পশ্চিম পাকিস্তানের মেরগড় এলাকায়ও খেজুরের চাষাবাদ সম্পর্কে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনে লিপিবদ্ধ আছে। দক্ষিণ এশিয়ার সভ্যতা হিসেবে বিবেচিত [[হরপ্পা]] এলাকার কথা উল্লেখ আছে খ্রিস্ট-পূর্ব ২৬০০ থেকে খ্রিস্ট-পূর্ব ১৯০০ বছর পর্যন্ত।
[[প্রস্তর যুগ|প্রস্তর যুগে]] পশ্চিম পাকিস্তানের মেরগড় এলাকায়ও খেজুরের চাষাবাদ সম্পর্কে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনে লিপিবদ্ধ আছে। দক্ষিণ এশিয়ার সভ্যতা হিসেবে বিবেচিত [[হরপ্পা]] এলাকার কথা উল্লেখ আছে খ্রিস্ট-পূর্ব ২৬০০ থেকে খ্রিস্ট-পূর্ব ১৯০০ বছর পর্যন্ত।


== উপকারিতা ==
== উপযোগিতা ==
{{Nutritional value
{{Nutritional value
| name = Dates
| name = Dates
১১৩ নং লাইন: ১১৩ নং লাইন:
প্রতি ১০০ গ্রাম পরিষ্কার ও তাজা খেজুর ফলে [[ভিটামিন সি]] রয়েছে যা থেকে ২৩০ [[ক্যালরি]] (৯৬০ [[জুল]]) শক্তি উৎপাদন করে। খেজুরে স্বল্প পরিমাণে [[পানি]] থাকে যা শুকানো অবস্থায় তেমন প্রভাব ফেলে না। কিন্তু এর প্রক্রিয়ার ফলে সঞ্চিত [[ভিটামিন সি]] খাদ্য উপাদান নষ্ট হয়ে যায়।
প্রতি ১০০ গ্রাম পরিষ্কার ও তাজা খেজুর ফলে [[ভিটামিন সি]] রয়েছে যা থেকে ২৩০ [[ক্যালরি]] (৯৬০ [[জুল]]) শক্তি উৎপাদন করে। খেজুরে স্বল্প পরিমাণে [[পানি]] থাকে যা শুকানো অবস্থায় তেমন প্রভাব ফেলে না। কিন্তু এর প্রক্রিয়ার ফলে সঞ্চিত [[ভিটামিন সি]] খাদ্য উপাদান নষ্ট হয়ে যায়।


[[তুরস্ক]], [[ইরাক]] এবং উত্তর আফ্রিকার পশ্চিমাঞ্চল [[মরক্কো|মরক্কোয়]] খেজুরের উপযোগিতা প্রাচীনকাল থেকেই রয়েছে। পবিত্র [[বাইবেল|বাইবেলে]] পঞ্চাশ বারেরও অধিক জায়গায় খেজুরের কথা উল্লেখ রয়েছে। ইসলামী দেশগুলোতে পবিত্র [[রমজান]] মাসে [[ইফতারী|ইফতারীতে]] খেজুরের ব্যবহার অনস্বীকার্য। মেদজুল এবং দেগলেত নূরজাতীয় খেজুরের চাষ [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের]] দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া, অ্যারিজোনা এবং দক্ষিণ ফ্লোরিডায় আবাদ করা হয়ে থাকে।
[[তুরস্ক]], [[ইরাক]] এবং উত্তর আফ্রিকার পশ্চিমাঞ্চল [[মরক্কো|মরক্কোয়]] খেজুরের উপযোগিতা প্রাচীনকাল থেকেই রয়েছে। পবিত্র [[বাইবেল|বাইবেলে]] পঞ্চাশ বারেরও অধিক জায়গায় খেজুরের কথা উল্লেখ রয়েছে। ইসলামী দেশগুলোতে পবিত্র [[রমজান]] মাসে [[ইফতার|ইফতারে]] খেজুরের ব্যবহার অনস্বীকার্য। মেদজুল এবং দেগলেত নূরজাতীয় খেজুরের চাষ [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের]] দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া, অ্যারিজোনা এবং দক্ষিণ ফ্লোরিডায় আবাদ করা হয়ে থাকে।


কচি খেজুর পাতা সব্জী হিসেবে [[রান্না]] করে খাওয়া যায়। এছাড়াও, খেজুরের ফুলও খাবার উপযোগী। সনাতনী ধাঁচে স্ত্রী ফুল ৩০০-৪০০ গ্রাম ওজনে বিক্রয় করা হয়। ফুলের [[কুঁড়ি]] দিয়ে [[সালাদ]] কিংবা [[শুকনো মাছ]] বা [[শুঁটকী]] দিয়ে [[চাটনী]] তৈরী করে [[রুটি|রুটির]] সাহায্যে খাওয়া হয়। খেজুরে বিশাল পরিমাণে পুষ্টিমান রয়েছে। [[পটাসিয়াম]] উপাদান [[রোগী|রোগীর]] [[পথ্য|পথ্যের]] জন্যে বিশাল উপযোগী ও এর ক্ষেত্র হিসেবে খেজুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পাকা খেজুরে প্রায় ৮০% [[চিনি|চিনিজাতীয়]] উপাদান রয়েছে। বাদ-বাকী অংশে [[খনিজ]] সমৃদ্ধ [[বোরন]], [[কোবাল্ট]], [[ফ্লুরিন]], [[ম্যাগনেসিয়াম]], [[ম্যাঙ্গানিজ]], [[সেলেনিয়াম]] এবং [[জিঙ্ক|জিঙ্কের]] ন্যায় গুরুত্বপূর্ণ [[খাদ্য উপাদান]] রয়েছে।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি |সাময়িকী = [[International Journal of Food Sciences and Nutrition]] |বছর=2003 |খণ্ড = 54 |সংখ্যা নং = 4|পাতাসমূহ=247–259 |শিরোনাম = The fruit of the date palm: its possible use as the best food for the future? |লেখক=Walid Al-Shahib, Richard J. Marshall |ইউআরএল=http://www.informaworld.com/smpp/content~db=all~content=a713995031}}</ref>
কচি খেজুর পাতা সব্জী হিসেবে [[রান্না]] করে খাওয়া যায়। এছাড়াও, খেজুরের ফুলও খাবার উপযোগী। সনাতনী ধাঁচে স্ত্রী ফুল ৩০০-৪০০ গ্রাম ওজনে বিক্রয় করা হয়। ফুলের [[কুঁড়ি]] দিয়ে [[সালাদ]] কিংবা [[শুঁটকি মাছ]] দিয়ে [[চাটনি]] তৈরী করে [[রুটি|রুটির]] সাহায্যে খাওয়া হয়। খেজুরে বিশাল পরিমাণে পুষ্টিমান রয়েছে। [[পটাশিয়াম]] উপাদান [[রোগী|রোগীর]] [[পথ্য|পথ্যের]] জন্যে বিশাল উপযোগী ও এর ক্ষেত্র হিসেবে খেজুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পাকা খেজুরে প্রায় ৮০% [[চিনি|চিনিজাতীয়]] উপাদান রয়েছে। বাদ-বাকী অংশে [[খনিজ]] সমৃদ্ধ [[বোরন]], [[কোবাল্ট]], [[ফ্লুরিন]], [[ম্যাগনেসিয়াম]], [[ম্যাঙ্গানিজ]], [[সেলেনিয়াম]] এবং [[জিঙ্ক|জিঙ্কের]] ন্যায় গুরুত্বপূর্ণ [[খাদ্য উপাদান]] রয়েছে।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি |সাময়িকী = [[International Journal of Food Sciences and Nutrition]] |বছর=2003 |খণ্ড = 54 |সংখ্যা নং = 4|পাতাসমূহ=247–259 |শিরোনাম = The fruit of the date palm: its possible use as the best food for the future? |লেখক=Walid Al-Shahib, Richard J. Marshall |ইউআরএল=http://www.informaworld.com/smpp/content~db=all~content=a713995031}}</ref>


[[মধ্যপ্রাচ্য|মধ্যপ্রাচ্যের]] দেশসমূহে সনাতনী ধারায় খেজুর থেকে [[ভিনেগার]] বা [[সিরকা]] প্রস্তুত করা হয়।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি | ডিওআই = 10.1021/ie50319a016 | শিরোনাম = Vinegar from Dates | বছর = 1936 | শেষাংশ১ = Das | প্রথমাংশ১ = Bhagwan | শেষাংশ২ = Sarin | প্রথমাংশ২ = J. L. | সাময়িকী = Industrial & Engineering Chemistry | খণ্ড = 28 | সংখ্যা নং = 7 | পাতাসমূহ = 814}}</ref><ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি | ইউআরএল = http://books.google.com/books?id=Y84UAAAAIAAJ&pg=PA78#v=onepage&q&f=false | শিরোনাম = Studies in Ancient Technology | লেখক১ = Forbes | প্রথমাংশ১ = Robert James | বছর = 1971}}</ref> মধ্যপ্রাচ্যে খেজুর অন্যতম প্রধান খাদ্য হিসাবে দীর্ঘদিন ব্যবহার হচ্ছে ৷
[[মধ্যপ্রাচ্য|মধ্যপ্রাচ্যের]] দেশসমূহে সনাতনী ধারায় খেজুর থেকে [[ভিনেগার]] বা [[সিরকা]] প্রস্তুত করা হয়।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি | ডিওআই = 10.1021/ie50319a016 | শিরোনাম = Vinegar from Dates | বছর = 1936 | শেষাংশ১ = Das | প্রথমাংশ১ = Bhagwan | শেষাংশ২ = Sarin | প্রথমাংশ২ = J. L. | সাময়িকী = Industrial & Engineering Chemistry | খণ্ড = 28 | সংখ্যা নং = 7 | পাতাসমূহ = 814}}</ref><ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি | ইউআরএল = http://books.google.com/books?id=Y84UAAAAIAAJ&pg=PA78#v=onepage&q&f=false | শিরোনাম = Studies in Ancient Technology | লেখক১ = Forbes | প্রথমাংশ১ = Robert James | বছর = 1971}}</ref> মধ্যপ্রাচ্যে খেজুর অন্যতম প্রধান খাদ্য হিসাবে দীর্ঘদিন ব্যবহার হচ্ছে ৷


[[বাংলাদেশ]], [[ভারত]], [[পাকিস্তান]], [[উত্তর আফ্রিকা]], [[ঘানা]], [[আইভরীকোস্ট|আইভরীকোস্টে]] খেজুর গাছের অংশ কেটে সুমিষ্ট রস বের করা হয়, যা [[খেজুরের রস]] নামে পরিচিত। রসকে পরবর্তীতে গুড়ে অথবা [[নেশা|নেশাজাতীয়]] [[পানীয়|পানীয়ে]] রূপান্তরিত করা হয়। উত্তর আফ্রিকায় এ প্রক্রিয়াকে ''লাগবি'' বলা হয়। রস আহরণের জন্যে অনেক সময়ের প্রয়োজন যা [[তাপমাত্রা|তাপমাত্রার]] উপর নির্ভরশীল। [[গাছ]] কেটে রস আহরণের জন্যে দক্ষতার প্রয়োজন নতুবা খেজুর গাছ মারা যাবে।
[[বাংলাদেশ]], [[ভারত]], [[পাকিস্তান]], [[উত্তর আফ্রিকা]], [[ঘানা]], [[কোত দিভোয়ার|আইভরি কোস্টে]] খেজুর গাছের অংশ কেটে সুমিষ্ট রস বের করা হয়, যা [[খেজুরের রস]] নামে পরিচিত। রসকে পরবর্তীতে গুড়ে অথবা [[নেশা|নেশাজাতীয়]] [[পানীয়|পানীয়ে]] রূপান্তরিত করা হয়। উত্তর আফ্রিকায় এ প্রক্রিয়াকে ''লাগবি'' বলা হয়। রস আহরণের জন্যে অনেক সময়ের প্রয়োজন যা [[তাপমাত্রা|তাপমাত্রার]] উপর নির্ভরশীল। [[গাছ]] কেটে রস আহরণের জন্যে দক্ষতার প্রয়োজন নতুবা খেজুর গাছ মারা যাবে।


== আন্তর্জাতিক খেজুর সম্মেলন ==
== আন্তর্জাতিক খেজুর সম্মেলন ==
লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলীতে ১৯৫৯ সালে সর্বপ্রথম [[আন্তর্জাতিক খেজুর সম্মেলন]] অনুষ্ঠিত হয়। ঐ সম্মেলনে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল যে, [[জাতিসংঘ|জাতিসংঘের]] উদ্যোগে খেজুর উৎপাদনের উন্নয়ন সংক্রান্ত বিশেষ কর্মসূচী নেয়া হবে। [[খাদ্য ও কৃষি সংস্থা]] বাণিজ্যিক ব্যবহার ও মানদণ্ডবিহীন খেজুর তদারকী করবে।
[[লিবিয়া|লিবিয়ার]] রাজধানী [[ত্রিপোলি|ত্রিপোলীতে]] ১৯৫৯ সালে সর্বপ্রথম [[আন্তর্জাতিক খেজুর সম্মেলন]] অনুষ্ঠিত হয়। ঐ সম্মেলনে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল যে, [[জাতিসংঘ|জাতিসংঘের]] উদ্যোগে খেজুর উৎপাদনের উন্নয়ন সংক্রান্ত বিশেষ কর্মসূচী নেয়া হবে। [[খাদ্য ও কৃষি সংস্থা]] বাণিজ্যিক ব্যবহার ও মানদণ্ডবিহীন খেজুর তদারকী করবে।


== বৈশ্বিক উৎপাদন ==
== বৈশ্বিক উৎপাদন ==
১৯১ নং লাইন: ১৯১ নং লাইন:
এছাড়াও, তিউনিসিয়া, চীন, ইয়েমেন, মরক্কো, নাইজার, তুরস্ক, ইসরায়েল, কাতার, মৌরতানিয়া, চাদ বিশ্বের প্রধান খেজুর উৎপাদনকারী দেশ। [[ইরাক]] এক সময় অন্যতম শীর্ষ খেজুর উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে উৎপাদন ও [[রপ্তানী|রপ্তানীর]] পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে কমে যায়।
এছাড়াও, তিউনিসিয়া, চীন, ইয়েমেন, মরক্কো, নাইজার, তুরস্ক, ইসরায়েল, কাতার, মৌরতানিয়া, চাদ বিশ্বের প্রধান খেজুর উৎপাদনকারী দেশ। [[ইরাক]] এক সময় অন্যতম শীর্ষ খেজুর উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে উৎপাদন ও [[রপ্তানী|রপ্তানীর]] পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে কমে যায়।


==বিশ্বের সবচেয়ে দামি খেজুর==
* বিশ্বে প্রায় ৩০০০ প্রজাতির খেজুর আছে। বাংলাদেশের বাজারে ১০০টিরও বেশি প্রজাতির খেজুর পাওয়া যায়। এর মধ্যে মাবরুম, মরিয়ম, সুকারি, সুগাই, ভিআইপি, মাশরুক, কালমি, আম্বার ও আজওয়া অন্যতম। বিশ্বের সবচেয়ে দামি খেজুর হলো আজওয়া। এর মধ্যেও অনেক পদ আছে। সৌদি আরবে ফলন হয় এই আজওয়া খেজুর। এর দাম প্রতি কেজি ৮০০-২৫০০ টাকা পর্যন্ত। আজওয়া খেজুর কালো, নরম, সুস্বাদু ও আকারে ছোট হয়। এর উপরে সাদা রেখা দেখা যায়।
* মেডজুল নামক খেজুর ‘খেজুরের রাজা’ হিসাবেও পরিচিত। এটি এখন দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। এর দাম প্রায় ১২০০-১৫০০ কেজি।<ref>[https://www.jagonews24.com/lifestyle/article/751835 বিশ্বের সবচেয়ে দামি খেজুর কোনটি?, জাগো নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম, ৫ এপ্রিল ২০২২]</ref>
==চিত্রশালা==
==চিত্রশালা==
<gallery>
<gallery>
File:খেজুর গাছ বাংলাদেশ.jpg
File:খেজুর গাছ বাংলাদেশ.jpg
File:খেজুর গাছের মাথা.jpg
File:খেজুর গাছের মাথা.jpg
Image:Wild Date Palm (Phoenix sylvestris) female flowers at Narendrapur W IMG 4056.jpg|Female flowers at [[Narendrapur]] near [[Kolkata]], [[West Bengal]], India.
Image:Wild Date Palm (Phoenix sylvestris) female flowers at Narendrapur W IMG 4056.jpg|পশ্চিমবঙ্গ, ভারতের কলকাতার কাছে নরেন্দ্রপুরে খেজুরের স্ত্রী ফুল
Image:Wild Date Palm (Phoenix sylvestris) male flowers at Narendrapur W IMG 4059.jpg|Male flowers at [[Narendrapur]] near [[Kolkata]], [[West Bengal]], India.
Image:Wild Date Palm (Phoenix sylvestris) male flowers at Narendrapur W IMG 4059.jpg|পশ্চিমবঙ্গ, ভারতের কলকাতার কাছে নরেন্দ্রপুরে খেজুরের পুরুষ ফুল
Image:Wild Data Palm-Yucatán-fruits-spines.jpg|Fruits and spines in the [[Yucatán Peninsula|Yucatán]], Mexico.
Image:Wild Data Palm-Yucatán-fruits-spines.jpg|ইউকাটান, মেক্সিকোতে খেজুরের ফল এবং কাঁটা
Image:Wild Date Palm (Phoenix sylvestris)- lower trunk at Purbasthali W IMG 1660.jpg|Lower trunk at [[Purbasthali]] in [[Bardhaman]] District of [[West Bengal]], India.
Image:Wild Date Palm (Phoenix sylvestris)- lower trunk at Purbasthali W IMG 1660.jpg|ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলীতে খেজুর গাছের কাণ্ডের নিম্ন অংশ
File:Ichalu with fruits.jpg| Fruits in [[Karnataka]], India.
File:Ichalu with fruits.jpg| ভারতের কর্ণাটকে খেজুর গাছে ঝুলে আছে ফল
File:Palm sugar - പനഞ്ചക്കര.jpeg|Palm Sugar from [[Kerala]] (India) traditional [[cottage industry]].
File:Palm sugar - പനഞ്ചക്കര.jpeg|কেরালায় (ভারত) ঐতিহ্যবাহী কুটির শিল্পে উৎপন্ন খেজুরের চিনি
File:Phoenix sylvestris (fruit).jpg|Fruits in Sri Lanka.
File:Phoenix sylvestris (fruit).jpg| শ্রীলঙ্কার খেজুর
</gallery>
</gallery>


২১১ নং লাইন: ২১৪ নং লাইন:
{{Wikisource1911Enc|Date Palm}}
{{Wikisource1911Enc|Date Palm}}
* [http://www.nutfruit.org INC, International Nut and Dried Fruit Council Foundation]
* [http://www.nutfruit.org INC, International Nut and Dried Fruit Council Foundation]
* [http://www.fao.org/documents/show_cdr.asp?url_file=/DOCREP/006/Y4360E/y4360e00.HTM Date Palm Cultivation] ([[Food and Agriculture Organization]])
* [http://www.fao.org/documents/show_cdr.asp?url_file=/DOCREP/006/Y4360E/y4360e00.HTM Date Palm Cultivation] {{ওয়েব আর্কাইভ|url=https://web.archive.org/web/20050104210106/http://www.fao.org/documents/show_cdr.asp?url_file=%2FDOCREP%2F006%2FY4360E%2Fy4360e00.HTM |date=৪ জানুয়ারি ২০০৫ }} ([[Food and Agriculture Organization]])
* [http://www.fao.org/docrep/t0681E/t0681e02.htm Date Palm Products] (Additional information from the FAO)
* [http://www.fao.org/docrep/t0681E/t0681e02.htm Date Palm Products] (Additional information from the FAO)
* [https://web.archive.org/web/20071120101334/http://www.iranica.com/newsite/articles/v7f2/v7f210.html Date Palm] entry in [[Encyclopaedia Iranica]]
* [https://web.archive.org/web/20071120101334/http://www.iranica.com/newsite/articles/v7f2/v7f210.html Date Palm] entry in [[Encyclopaedia Iranica]]
২২৪ নং লাইন: ২২৭ নং লাইন:
[[বিষয়শ্রেণী:ক্রান্তীয় কৃষি]]
[[বিষয়শ্রেণী:ক্রান্তীয় কৃষি]]
[[বিষয়শ্রেণী:ক্রান্তীয় ফল]]
[[বিষয়শ্রেণী:ক্রান্তীয় ফল]]
[[বিষয়শ্রেণী:১৭৫৩-এ বর্ণিত উদ্ভিদ]]
[[বিষয়শ্রেণী:আফ্রিকার উদ্ভিদ]]
[[বিষয়শ্রেণী:ফলদ বৃক্ষ]]
[[বিষয়শ্রেণী:আফ্রিকার উদ্যান উদ্ভিদ]]
[[বিষয়শ্রেণী:এশিয়ার উদ্যান উদ্ভিদ]]

০৯:০৭, ১১ জুলাই ২০২৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

খেজুর
Phoenix dactylifera
খেজুর গাছ, রশিদিয়া, দুবাই
Secure
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: উদ্ভিদ
বিভাগ: সপুষ্পক উদ্ভিদ(Magnoliophyta)
শ্রেণী: Liliopsida
বর্গ: Arecales
পরিবার: Arecaceae
গণ: Phoenix
প্রজাতি: P. dactylifera
দ্বিপদী নাম
Phoenix dactylifera
এল.
প্রতিশব্দ[]
  • Palma dactylifera (L.) Mill.
  • Phoenix chevalieri D.Rivera, S.Ríos & Obón
  • Phoenix iberica D.Rivera, S.Ríos & Obón

খেজুর এক ধরনের তালজাতীয় শাখাবিহীন বৃক্ষ। এর বৈজ্ঞানিক নাম ফিনিক্স ড্যাকটিলিফেরা (Phoenix dactylifera)। মানব সভ্যতার ইতিহাসে সুমিষ্ট ফল হিসেবে এর গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ায় অনেক বছর পূর্ব থেকেই এর চাষাবাদ হয়ে আসছে। এ গাছটি প্রধানত মরু এলাকায় ভাল জন্মে। খেজুর গাছের ফলকে খেজুররূপে আখ্যায়িত করা হয়। মাঝারি আকারের গাছ হিসেবে খেজুর গাছের উচ্চতা গড়পড়তা ১৫ মিটার থেকে ২৫ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। এর লম্বা পাতা রয়েছে যা পাখির পালকের আকৃতিবিশিষ্ট। দৈর্ঘ্যে পাতাগুলো ৩ থেকে ৫ মিটার পর্যন্ত হয়। পাতায় দৃশ্যমান পত্রদণ্ড রয়েছে। এক বা একাধিক বৃক্ষ কাণ্ড রয়েছে যা একটিমাত্র শাখা থেকে এসেছে।

পুষ্টি উপাদান

খেজুর অত্যন্ত সুস্বাদু ও বেশ পরিচিত একটি ফল। যা ফ্রুকটোজ এবং গ্লাইসেমিক সমৃদ্ধ। এটা রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়। খেজুর ফলকে চিনির বিকল্প হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। খেজুর শক্তির একটি ভালো উৎস। তাই খেজুর খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরের ক্লান্তিভাব দূর হয়। আছে প্রচুর ভিটামিন বি। যা ভিটামিন বিসিক্স মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।

খেজুরের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে বলা হয়, চারটি বা ৩০ গ্রাম পরিমাণ খেজুরে আছে ৯০ ক্যালোরি, এক গ্রাম প্রোটিন, ১৩ মি.লি. গ্রাম ক্যালসিয়াম, ২ দশমিক ৮ গ্রাম ফাইবার। এছাড়াও খেজুরের রয়েছে আরও অনেক পুষ্টি উপাদান। উদাহরণস্বরূপ খুরমা খেজুর।



নামকরণ

[সম্পাদনা]
বাংলাদেশের একটি খেঁজুরগাছ

খেজুর গাছের দ্বিপদ নামের প্রজাতিক অংশ dactylifera এর অর্থ "খেজুর বহনকারী"। নামটি প্রথম অংশ প্রাচীন গ্রীক ভাষা dáktulos থেকে এসেছে যার অর্থ "খেজুর" (এর আরেক অর্থ "আঙুল")। আর পরবর্তী অংশ ferō এসেছে ল্যাটিন ভাষা থেকে যার অর্থ "আমি বহন করি"।[] খেজুর গাছের ফল খেজুর নামে পরিচিত।[]

বৈশিষ্ট্যাবলী

[সম্পাদনা]

ফলটি ডিম্বাকৃতির হয়ে থাকে, যার দৈর্ঘ্য ৩-৭ সে.মি. এবং ব্যাসার্ধে ২-৩ সে.মি. হয়ে থাকে। প্রজাতির উপর নির্ভর করে কাঁচা ফল উজ্জ্বল লাল কিংবা উজ্জ্বল হলুদ বর্ণের হয়ে থাকে। একবীজপত্রী উদ্ভিদ হিসেবে এর বীজ ২-২.৫ সে.মি লম্বা এবং ৬-৮ মি.মি পুরুত্বের হয়। প্রধান তিনটি চাষাবাদ উপযোগী খেজুরের মধ্যে রয়েছে - (ক) নরম (বর্হি, হলয়ি, খাদরয়ি, মেদজুল); (খ) অর্ধ-শুষ্ক (দেরি, দেগলেত নূর, জাহদি) এবং (গ) শুকনো (থুরি)। ফলের রকমফেরের ভিন্নতাজনিত কারণে গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ এবং সুক্রোজের ন্যায় বিভিন্ন উপাদানের মাত্রা নির্ভরশীল।

চারটি পর্যায়ে খেজুরকে পাকানো হয়। আরবী ভাষায় সেগুলো বিশ্বব্যাপী কিমরি (কাঁচা), খলাল (পূর্ণাঙ্গ, ক্রাঞ্চি), রুতাব (পাকা, নরম), তমর (পাকা, সূর্যে শুকানো) নামে পরিচিত।

গাছে ফল উৎপাদনের জন্য সচরাচর ৪ থেকে ৮ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। তবে বাণিজ্যিকভাবে ফসল উৎপাদন উপযোগী খেজুর গাছে ফল আসতে ৭ থেকে ১০ বছর সময় লেগে যায়। পূর্ণাঙ্গ খেজুর গাছে প্রতি মৌসুমে গড়ে ৮০-১২০ কিলোগ্রাম (১৭৬-২৬৪ পাউন্ড) ফল পাওয়া যায়। বাজারজাতকরণের উপযোগী ফল আহরণের জন্য ফলের শাখাকে পাতলা হতে হয়। এর ফলে ফলগুচ্ছ নুইয়ে পড়ে, নিচের ফলগুলো বড় আকারের হয় এবং বাজে আবহাওয়াপাখির আক্রমণ থেকে রক্ষা পায়।

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

সুদীর্ঘকাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রধানত মধ্যপ্রাচ্যদক্ষিণ এশিয়ার কিয়দাংশে জনসাধারণের কাছে খেজুর প্রধান উপাদেয় খাদ্য হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। তবে, খেজুরের চাষাবাদ কিংবা খেজুর গাছের উৎপত্তি সম্বন্ধে সঠিক কোন তথ্য জানা যায়নি। ধারণা করা হয় যে, পারস্য উপসাগরের তীরবর্তী দেশগুলোয় সর্বপ্রথম এর চাষাবাদ হয়েছিল।[] সম্ভবতঃ প্রাচীনকাল থেকেই মেসোপটেমিয়া থেকে প্রাগৈতিহাসিক মিশরের অধিবাসীরা খ্রিস্ট-পূর্ব ৪০০০ বছর থেকে এ গাছের গুণাগুন সম্পর্কে অবগত ছিল। প্রাচীন মিশরীয়রা এর ফল থেকে মদজাতীয় পানীয় প্রস্তুত করে ফসলের সময় তা পান করতো। খ্রিস্ট-পূর্ব ৬০০০ বছর আগেকার সময়ে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনে দেখা যায় যে, পূর্বাঞ্চলীয় আরবেও এর চাষাবাদ হতো।

প্রস্তর যুগে পশ্চিম পাকিস্তানের মেরগড় এলাকায়ও খেজুরের চাষাবাদ সম্পর্কে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনে লিপিবদ্ধ আছে। দক্ষিণ এশিয়ার সভ্যতা হিসেবে বিবেচিত হরপ্পা এলাকার কথা উল্লেখ আছে খ্রিস্ট-পূর্ব ২৬০০ থেকে খ্রিস্ট-পূর্ব ১৯০০ বছর পর্যন্ত।

উপকারিতা

[সম্পাদনা]
Dates
প্রতি 100 grams-এ পুষ্টিমান
শক্তি১,১৭৮ কিজু (২৮২ kcal)
৭৫.০৩ g
চিনি৬৩.৩৫ g
খাদ্য আঁশ৮ g
০.৩৯ g
২.৪৫
ভিটামিনপরিমাণ দৈপ%
ভিটামিন এ সমতুল্য
০%
৬ μg
৭৫ μg
ভিটামিন এ১০ IU
থায়ামিন (বি)
৫%
০.০৫২ মিগ্রা
রিবোফ্লাভিন (বি)
৬%
০.০৬৬ মিগ্রা
নায়াসিন (বি)
৮%
১.২৭৪ মিগ্রা
প্যানটোথেনিক
অ্যাসিড (বি)
১২%
০.৫৮৯ মিগ্রা
ভিটামিন বি
১৩%
০.১৬৫ মিগ্রা
ফোলেট (বি)
৫%
১৯ μg
ভিটামিন সি
০%
০.৪ মিগ্রা
ভিটামিন ই
০%
০.০৫ মিগ্রা
ভিটামিন কে
৩%
২.৭ μg
খনিজপরিমাণ দৈপ%
ক্যালসিয়াম
৪%
৩৯ মিগ্রা
লৌহ
৮%
১.০২ মিগ্রা
ম্যাগনেসিয়াম
১২%
৪৩ মিগ্রা
ম্যাঙ্গানিজ
১২%
০.২৬২ মিগ্রা
ফসফরাস
৯%
৬২ মিগ্রা
পটাশিয়াম
১৪%
৬৫৬ মিগ্রা
সোডিয়াম
০%
২ মিগ্রা
জিংক
৩%
০.২৯ মিগ্রা
অন্যান্য উপাদানপরিমাণ
পানি২০.৫৩ g
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মার্কিন সুপারিশ ব্যবহার করে শতাংশ অনুমান করা হয়েছে।
উৎস: ইউএসডিএ ফুডডাটা সেন্ট্রাল

প্রতি ১০০ গ্রাম পরিষ্কার ও তাজা খেজুর ফলে ভিটামিন সি রয়েছে যা থেকে ২৩০ ক্যালরি (৯৬০ জুল) শক্তি উৎপাদন করে। খেজুরে স্বল্প পরিমাণে পানি থাকে যা শুকানো অবস্থায় তেমন প্রভাব ফেলে না। কিন্তু এর প্রক্রিয়ার ফলে সঞ্চিত ভিটামিন সি খাদ্য উপাদান নষ্ট হয়ে যায়।

তুরস্ক, ইরাক এবং উত্তর আফ্রিকার পশ্চিমাঞ্চল মরক্কোয় খেজুরের উপযোগিতা প্রাচীনকাল থেকেই রয়েছে। পবিত্র বাইবেলে পঞ্চাশ বারেরও অধিক জায়গায় খেজুরের কথা উল্লেখ রয়েছে। ইসলামী দেশগুলোতে পবিত্র রমজান মাসে ইফতারে খেজুরের ব্যবহার অনস্বীকার্য। মেদজুল এবং দেগলেত নূরজাতীয় খেজুরের চাষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া, অ্যারিজোনা এবং দক্ষিণ ফ্লোরিডায় আবাদ করা হয়ে থাকে।

কচি খেজুর পাতা সব্জী হিসেবে রান্না করে খাওয়া যায়। এছাড়াও, খেজুরের ফুলও খাবার উপযোগী। সনাতনী ধাঁচে স্ত্রী ফুল ৩০০-৪০০ গ্রাম ওজনে বিক্রয় করা হয়। ফুলের কুঁড়ি দিয়ে সালাদ কিংবা শুঁটকি মাছ দিয়ে চাটনি তৈরী করে রুটির সাহায্যে খাওয়া হয়। খেজুরে বিশাল পরিমাণে পুষ্টিমান রয়েছে। পটাশিয়াম উপাদান রোগীর পথ্যের জন্যে বিশাল উপযোগী ও এর ক্ষেত্র হিসেবে খেজুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পাকা খেজুরে প্রায় ৮০% চিনিজাতীয় উপাদান রয়েছে। বাদ-বাকী অংশে খনিজ সমৃদ্ধ বোরন, কোবাল্ট, ফ্লুরিন, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, সেলেনিয়াম এবং জিঙ্কের ন্যায় গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদান রয়েছে।[]

মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে সনাতনী ধারায় খেজুর থেকে ভিনেগার বা সিরকা প্রস্তুত করা হয়।[][] মধ্যপ্রাচ্যে খেজুর অন্যতম প্রধান খাদ্য হিসাবে দীর্ঘদিন ব্যবহার হচ্ছে ৷

বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, উত্তর আফ্রিকা, ঘানা, আইভরি কোস্টে খেজুর গাছের অংশ কেটে সুমিষ্ট রস বের করা হয়, যা খেজুরের রস নামে পরিচিত। রসকে পরবর্তীতে গুড়ে অথবা নেশাজাতীয় পানীয়ে রূপান্তরিত করা হয়। উত্তর আফ্রিকায় এ প্রক্রিয়াকে লাগবি বলা হয়। রস আহরণের জন্যে অনেক সময়ের প্রয়োজন যা তাপমাত্রার উপর নির্ভরশীল। গাছ কেটে রস আহরণের জন্যে দক্ষতার প্রয়োজন নতুবা খেজুর গাছ মারা যাবে।

আন্তর্জাতিক খেজুর সম্মেলন

[সম্পাদনা]

লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলীতে ১৯৫৯ সালে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক খেজুর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ঐ সম্মেলনে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল যে, জাতিসংঘের উদ্যোগে খেজুর উৎপাদনের উন্নয়ন সংক্রান্ত বিশেষ কর্মসূচী নেয়া হবে। খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বাণিজ্যিক ব্যবহার ও মানদণ্ডবিহীন খেজুর তদারকী করবে।

বৈশ্বিক উৎপাদন

[সম্পাদনা]

খাদ্য ও কৃষি সংস্থার পরিসংখ্যান মোতাবেক ২০০৪ সালে বিশ্বব্যাপী ৬.৭ মিলিয়ন টন খেজুর উৎপাদিত হয়েছিল।

প্রথম দশটি খেজুর উৎপাদনকারি দেশ – ২০১৭
(tonnes)
 Egypt ১,৫৪২,১১১
 সৌদি আরব ১,২২৪,১৯২
 ইরান ১,২০২,২০০
 আলজেরিয়া ১,০৫৮,৫৫৯
 ইরাক ৬১৮,৮১৮
 PAK ৪৪০,৬০৬
 সুদান ৪৩৯,৩৫৫
 ওমান ৩৬০,৯১৭
 UAE ৩৪৪,৭১৪
 তিউনিসিয়া ২৬০,০০০
বিশ্ব ৮,৩৮৪,২৮৬
Source:
UN Food and Agriculture Organization (FAO)
[]
কুয়েত সিটির পুরাতন বাজারে খেজুর বিক্রেতা
সৌদি আরবের খেজুরের শহর বুরাইদা

বিশ্বের সর্বত্রই খেজুর উৎপাদন হলেও মূলতঃ মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার দেশগুলোতেই এর উৎপাদন সবচেয়ে বেশি। প্রধান খেজুর উৎপাদনকারী দেশসমূহের তালিকা নিম্নে দেয়া হলো।

শীর্ষ খেজুর উৎপাদনকারী দেশের তালিকা
অবস্থান দেশের নাম পরিমাণ (টন) বৈশ্বিক হার (%)
 মিশর ১,১০০,০০০ ১৬.২%
 ইরান ৮৮০,০০০ ১৩.০%
 সৌদি আরব ৮৩০,০০০ ১২.৩%
 সংযুক্ত আরব আমিরাত ৭৬০,০০০ ১১.২%
 পাকিস্তান ৬৫০,০০০ ৯.৬%
 আলজেরিয়া ৪৫০,০০০ ৬.৬%
 সুদান ৩৩০,০০০
 ওমান ২৪০,০০০
 লিবিয়া ১৪০,০০০
১০ বহিঃর্বিশ্ব ১,১৪০,০০০

এছাড়াও, তিউনিসিয়া, চীন, ইয়েমেন, মরক্কো, নাইজার, তুরস্ক, ইসরায়েল, কাতার, মৌরতানিয়া, চাদ বিশ্বের প্রধান খেজুর উৎপাদনকারী দেশ। ইরাক এক সময় অন্যতম শীর্ষ খেজুর উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে উৎপাদন ও রপ্তানীর পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে কমে যায়।

বিশ্বের সবচেয়ে দামি খেজুর

[সম্পাদনা]
  • বিশ্বে প্রায় ৩০০০ প্রজাতির খেজুর আছে। বাংলাদেশের বাজারে ১০০টিরও বেশি প্রজাতির খেজুর পাওয়া যায়। এর মধ্যে মাবরুম, মরিয়ম, সুকারি, সুগাই, ভিআইপি, মাশরুক, কালমি, আম্বার ও আজওয়া অন্যতম। বিশ্বের সবচেয়ে দামি খেজুর হলো আজওয়া। এর মধ্যেও অনেক পদ আছে। সৌদি আরবে ফলন হয় এই আজওয়া খেজুর। এর দাম প্রতি কেজি ৮০০-২৫০০ টাকা পর্যন্ত। আজওয়া খেজুর কালো, নরম, সুস্বাদু ও আকারে ছোট হয়। এর উপরে সাদা রেখা দেখা যায়।
  • মেডজুল নামক খেজুর ‘খেজুরের রাজা’ হিসাবেও পরিচিত। এটি এখন দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। এর দাম প্রায় ১২০০-১৫০০ কেজি।[]

চিত্রশালা

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "The Plant List, Phoenix dactylifera L."। ১৭ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০২১ 
  2. Henry George Liddell, Robert Scott, A Greek-English Lexicon
  3. "Date Palm." 15 October 2008. HowStuffWorks.com.
  4. Morton, J. 1987. Date. p. 5–11. In: Fruits of warm climates. Julia F. Morton. Miami, FL. — Purdue University. Center for New Crops and Plants Products.
  5. Walid Al-Shahib, Richard J. Marshall (২০০৩)। "The fruit of the date palm: its possible use as the best food for the future?"International Journal of Food Sciences and Nutrition54 (4): 247–259। 
  6. Das, Bhagwan; Sarin, J. L. (১৯৩৬)। "Vinegar from Dates"। Industrial & Engineering Chemistry28 (7): 814। ডিওআই:10.1021/ie50319a016 
  7. Forbes, Robert James (১৯৭১)। "Studies in Ancient Technology" 
  8. "FAOSTAT:Crops"। Elements:Production Quantity / Items:Dates। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-২৬ 
  9. বিশ্বের সবচেয়ে দামি খেজুর কোনটি?, জাগো নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম, ৫ এপ্রিল ২০২২

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]