জর্জ বেনথাম
জর্জ বেনথাম | |
---|---|
জন্ম | স্টোক, প্লাইমাউথ, ইংল্যান্ড | ২২ সেপ্টেম্বর ১৮০০
মৃত্যু | ১০ সেপ্টেম্বর ১৮৮৪ লন্ডন, ইংল্যান্ড | (বয়স ৮৩)
জাতীয়তা | ইংরেজ |
দাম্পত্য সঙ্গী | সারা জোন্স |
পুরস্কার | ১৮৫৯ সালে রয়্যাল সোসাইটির রয়্যাল মেডেল ১৮৭৯ সালে রয়্যাল সোসাইটি অফ নিউ সাউথ ওয়েলসর ক্লার্ক মেডেল |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | উদ্ভিদ বিজ্ঞান |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনস, কেও |
Author abbrev. (botany) | বেন্থ (Benth.) |
জর্জ বেনথাম (George Bentham, সিএমজি এফআরএস এফএলএস, ২২ সেপ্টেম্বর ১৮০০ - ১০ সেপ্টেম্বর ১৮৮৪) ছিলেন একজন ইংরেজি উদ্ভিদবিজ্ঞানী। আগাছা উদ্ভিদবিদ ডুয়েন ইসেলি তাঁকে "উনিশ শতকের প্রিমিয়ার সিস্টেমেটিক উদ্ভিদবিদ" হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন। [১] বিশিষ্ট পরিবারে জন্মগ্রহণ করে তিনি প্রথমে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। তবে অল্প বয়স থেকেই উদ্ভিদবিদ্যার প্রতি তাঁর আকর্ষণ ছিল। তিনি শীঘ্রই তা অনুসরণ করে ১৮৬১ সালে লিনিয়ান সোসাইটির সভাপতি হন এবং ১৮৬২ সালে রয়্যাল সোসাইটির ফেলো হন। তিনি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভিদবিদ্যা বিষয়ক কাজের বিশেষ করে উদ্ভিদ সংক্রান্ত বিষয়ের রচয়িতা ছিলেন। তিনি জোসেফ ডাল্টন হুকার এর সহযোগিতায় তাঁর ট্যাক্সোনমিক উদ্ভিদের শ্রেণিবিন্যাস এর বই জেনেরা প্ল্যান্টারাম (১৮৬২-১৮৮৩) এর জন্য সর্বাধিক পরিচিত। ১৮৮৪ সালে তিনি লন্ডনে মারা যান।
জীবন
[সম্পাদনা]১৮০০ সালের ২২ সেপ্টেম্বরে বেনথামের জন্ম প্লাইমাউথ এর অন্তর্গত স্টোক এ। [২][৩] তাঁর পিতা স্যার স্যামুয়েল বেনথাম একজন ন্যাভাল স্থপতি ছিলেন এবং তাঁর মা মেরি সোফিয়া বেনথাম একজন উদ্ভিদবিজ্ঞানী এবং লেখিকা ছিলেন। তাঁর একমাত্র ভাই জেরেমি বেনথাম যৌবনপ্রাপ্তির আগেই মারা যান।[৪] বেনথামের কোনও আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল না তবে তাঁর একটি উল্লেখযোগ্য ভাষাগত দক্ষতা ছিল। সাত বছর বয়সে তিনি ফরাসী, জার্মান এবং রাশিয়ান ভাষায় কথা বলতে পারতেন এবং তিনি ছোটবেলায় সুইডেনে একটি স্বল্প আবাসে থাকার সময়ে সুইডিশ শিখতেন। তাঁর পরিবার ফ্রান্সে দীর্ঘ ভ্রমণকালে দুই বছর মন্টাউবান এ ছিলেন। সেখানে বেনথাম প্রোটেস্ট্যান্ট থিওলজিক বিদ্যালয়ে হিব্রু এবং গণিত অধ্যয়ন করেছিল। অবশেষে মন্টপেলিয়ার এর কাছে স্যার স্যামুয়েল বেনথাম একটি বড় সম্পত্তি কিনে সেখানেই অবস্থান করেন।[৫]
অ্যাঙ্গোলেমে এ অধ্যয়নকালে বেনথামের হাতে এ. পি. ডি ক্যান্ডোলে এর ফ্লোরে ফ্রেঞ্চাইজির (Flore française) একটি কপি আসে এবং তার দ্বারা উদ্ভিদ সনাক্তকরণের জন্য বিশ্লেষণাত্মক সারণিতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তিনি তৎক্ষণাত প্রথম যে উদ্ভিদগুলি দেখেন সেগুলিতে তা প্রয়োগ করেন। ফলাফলে সফল হয়ে তিনি সংস্পর্শে আসা প্রতিটি উদ্ভিদে সেটি প্রয়োগ করেন। ১৮২৩ সালে লন্ডনে তিনি ইংরেজি উদ্ভিদবিদদের সাথে দেখা করেন। তাঁর কাকা তাঁকে লিংকন ইন এ আইন অধ্যয়নের জন্য চাপ দেন। ১৮৩২ সালে তিনি কলড টু দ্য বার এ তাঁর প্রথম এবং একমাত্র আইনি সংক্ষিপ্তসার টি প্রদান করেন। [৫] যাইহোক উদ্ভিদবিদ্যায় তাঁর আগ্রহ কখনই হ্রাস পায়নি এবং ১৮২৯ থেকে ১৮৪০ পর্যন্ত তিনি হর্টিকালচারাল সোসাইটি অফ লন্ডন এর সেক্রেটারি হয়েছিলেন। [৬]
১৮৩২ সালে তিনি তাঁর কাকা জেরেমি বেনথাম এর সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলেন। আগের বছর তাঁর পিতার সম্পত্তিও উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত হওয়ার তাঁর পছন্দ মতো উদ্ভিদবিজ্ঞান, আইনশাস্ত্র এবং যুক্তি শাস্ত্রের জন্য ব্যয় করার পক্ষে তা যথেষ্ট হয়েছিল।
বেনথাম ১১ এপ্রিল ১৮৩৩-এ স্যার হারফোর্ড জোন্স ব্রাইডেজ এর কন্যা সারা জোন্সকে (১৭৯৮–১৮৮১) বিয়ে করেছিলেন; তাঁদের কোন সন্তান ছিল না। [৭]
১৮৮৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর তাঁর লন্ডনের বাড়িতে ৮৮ বছর বয়সে বেনথাম মারা যান।[৩] তাঁকে ব্রম্পটন কবরস্থান এ সমাধিস্থ করা হয়েছিল।[৮]
কর্ম জীবন
[সম্পাদনা]বিবর্তন সম্পর্কে মতামত
[সম্পাদনা]ডারউইনের বিপ্লবের বিস্তার ঘটাতে বেনথাম তাঁর জীবন ব্যায় করেছিলেন। তাঁর তরুণ সহকর্মী জোসেফ ডাল্টন হুকার ছিলেন ডারউইন এর নিকটতম বন্ধু এবং ডারউইনের ধারণাসমূহ সমর্থণকারী প্রথম ব্যক্তিদের মধ্যে একজন। তার আগে পর্যন্ত বেনথাম সন্দেহাতীতভাবে বিশ্বাস করতেন যে প্রজাতিগুলির বিবর্তণ হয় না - স্থির থাকে। ১৮৭৪ সালে তিনি লিখেছিলেন যে " প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে বিবর্তন তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্য পনেরো বছর যথেষ্ট"। [৯] টাইপোলজি ইন ট্যাক্সোনমি থেকে নতুন চিন্তাধারার দ্বারা বেনথামের রূপান্তরটি সম্পূর্ণ হয়েছিল এবং তিনি তা একটি প্রশংসাতে উল্লেখ করেছিলেন "আমরা একটি একক ব্যক্তির থেকে কোনও প্রজাতি বা তার একটি প্রজাতির একটি জেনাসের ধারণা তৈরি করতে পারি না। আমরা আর সাধারণ প্রজাতি সেট করতে পারি না।"[১০]
সম্মান ও পুরস্কার
[সম্পাদনা]বেনথাম ১৮৫৯ সালে রয়্যাল সোসাইটি প্রদত্ত রয়্যাল পদক এ ভূষিত হন এবং ১৮৬২ সালে রয়্যাল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হন।[১১] তিনি ১৮৬১ থেকে ১৮৭৪ পর্যন্ত লিনিয়ান সোসাইটি অফ লন্ডন এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[১২] ১৮৬৬ সালে তিনি আমেরিকান একাডেমি অফ আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস এর একজন বিদেশি সম্মানীয় সদস্য নির্বাচিত হন।[১৩] ১৮৭৮ সালে তাঁকে সিএমজি (কম্পেনিয়ন অফ সেন্ট মাইকেল অ্যান্ড সেন্ট জর্জে) নিযুক্ত করা হয়েছিল। তাঁর বিদেশী পুরষ্কারের মধ্যে রয়েছে ১৮৭৯ সালে প্রাপ্ত রয়্যাল সোসাইটি অব নিউ সাউথ ওয়েলস প্রদত্ত ক্লার্ক মেডেল।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Isely 2002, পৃ. 163-166।
- ↑ Anon 1999, পৃ. 43।
- ↑ ক খ Jean-Jacques Amigo, « Bentham (George) », in Nouveau Dictionnaire de biographies roussillonnaises, vol. 3 Sciences de la Vie et de la Terre, Perpignan, Publications de l'olivier, 2017, 915 p. (আইএসবিএন ৯৭৮২৯০৮৮৬৬৫০৬)
- ↑ Harris, Barbara Jean; McNamara, Jo Ann (১৯৮৪)। Women and the structure of society: selected research from the Fifth Berkshire Conference on the History of Women। Duke University Press। পৃষ্ঠা 71। আইএসবিএন 9780822306030। সংগ্রহের তারিখ ১ আগস্ট ২০১৮।
For example, the career of George Bentham, writer on botany and president of the Linnean Society from 1861 to 1874, "seems to have been largely due to his mother," Lady Mary Bentham (c. 1765-1858), who had a herbarium and was said to have been a very good botanist.
- ↑ ক খ Chisholm 1911।
- ↑ Cribb, Phillip (২০১০)। "The orchid collections and illustrations of Consul Friedrich C. Lehmann" (পিডিএফ)। Lankesteriana। 10 (2–3)। আইএসএসএন 2215-2067। ডিওআই:10.15517/lank.v10i2-3.18317।
- ↑ Burke, John; Burke, Sir Bernard (১৯০৬)। A Genealogical and Heraldic History of The Landed Gentry of Great Britain। London।
- ↑ ফাইন্ড এ গ্রেইভে জর্জ বেনথাম (ইংরেজি)
- ↑ Green 1914, পৃ. 498।
- ↑ Green 1914, পৃ. 499।
- ↑ "Library and Archive Catalogue"। Royal Society। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ডিসেম্বর ২০১০।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "George Bentham"। Botanical Gazette। 10 (1): 211–213। ১৮৮৫। জেস্টোর 2994865। ডিওআই:10.1086/325816 ।
- ↑ "Ch. B" (পিডিএফ)। Book of Members, 1780–2010। American Academy of Arts and Sciences। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুন ২০১১।
গ্রন্থপঞ্জি
[সম্পাদনা]- Jean-Jacques Amigo, « Bentham (George) », in Nouveau Dictionnaire de biographies roussillonnaises, vol. 3 Sciences de la Vie et de la Terre, Perpignan, Publications de l'olivier, 2017, 915 p. (আইএসবিএন ৯৭৮২৯০৮৮৬৬৫০৬)
- Anon (১৯৯৯)। A Dictionary of Scientists। Oxford: University Press। আইএসবিএন 978-0-19-280086-2।
- এই নিবন্ধটি একটি প্রকাশন থেকে অন্তর্ভুক্ত পাঠ্য যা বর্তমানে পাবলিক ডোমেইনে: চিসাম, হিউ, সম্পাদক (১৯১১)। "Bentham, George"। ব্রিটিশ বিশ্বকোষ। 3 (১১তম সংস্করণ)। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস।
- Green, Joseph Reynolds (১৯১৪)। A History of Botany in the United Kingdom from the Earliest Times to the End of the 19th Century। London: J. M. Dent & sons।
- Isely, Duane (২০০২)। One Hundred and One Botanists। Purdue University Press। আইএসবিএন 978-1-55753-283-1।
- Bettany, George Thomas (১৮৮৫)। "Bentham, George"। Leslie Stephen। Dictionary of National Biography। 4। London: Smith, Elder & Co।
আরও পড়ুন
[সম্পাদনা]- Jackson, Benjamin Daydon (১৯০৬)। George Bentham। J.M. Dent. & Company।
- Bentham, George (১৯৯৭)। Filipuik, Marion, সম্পাদক। George Bentham: Autobiography, 1800-1834। University of Toronto Press। আইএসবিএন 978-0-8020-0791-9।
- Bentham, George (১৮৩৯–১৮৫৭)। Plantas Hartwegianas।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ইন্টারনেট আর্কাইভে জর্জ বেনথাম কর্তৃক কাজ বা সম্পর্কে তথ্য
- "Bentham, George" at Botanicus Missouri Botanical Garden Library