প্রিয়াঙ্কা ইয়োশিকাওয়া
প্রিয়াঙ্কা ইয়োশিকাওয়া | |
---|---|
জন্ম | |
উচ্চতা | ১.৭৬ মিটার (৫ ফুট ৯+১⁄২ ইঞ্চি) |
উপাধি | মিস ওয়ার্ল্ড জাপান ২০১৬ |
সুন্দরী প্রতিযোগিতায় শিরোপাধারী | |
চুলের রং | কালো |
চোখের রং | বাদামী |
প্রধান প্রতিযোগিতা | মিস ওয়ার্ল্ড জাপান ২০১৬ (Winner) br>(প্রথম ২০) |
প্রিয়াঙ্কা ইয়োশিকাওয়া (吉川 プリアンカ, জন্ম ২০, জানুয়ারী, ১৯৯৪) একজন জাপানী অনুবাদক এবং সুন্দরী প্রতিযোগিতার খেতাবপ্রাপ্ত, যিনি ২০১৬ সালে মিস ওয়ার্ল্ড জাপান-এর মুকুট বিজয়ী হন।[১] ২০১৫ সালের মিস ইউনিভার্স জাপান বিজয়ী আরিয়ানা ইউসুকে ফুজিটার পরে প্রিয়াঙ্কা দ্বিতীয় বহুজাতিক জাপানী যিনি মিস জাপান খেতাবি লাভ করেন, এবং চতুর্থ অংশগ্রহণকারী আরিয়ানা, ইউসুকে ফুজিটা (মিস্টার গ্লোবাল জাপান ২০১৬) এবং ইউকি সাতো (মিস্টার ওয়ার্ল্ড জাপান ২০১৬)-এর পরে।[২] প্রিয়াঙ্কার মা একজন জাপানীজ।[২]
প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]প্রিয়াঙ্কার জন্ম টোকিওতে। প্রিয়াঙ্কার মা জাপানী এবং তার পিতা একজন বাঙালি। তার ঠাকুরদার বাবা (প্রপিতামহ) প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষ ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী।[৩][৪]
প্রিয়াঙ্কার পূর্বপুরুষের বাড়ি বাংলাদেশের ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার মালিকান্দা গ্রামে। তিনি সম্ভ্রান্ত ঘোষ পরিবারের কন্যা।[৫]
১৯৮৫ সালের ২১ আগস্ট তার বাবা অরুণ ঘোষ বাংলাদেশ থেকে জাপানে চলে যান। সেখানে অরুণ ঘোষ কয়েক বছর পর জাপানি নারী নাউকোর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর পার্মানেন্ট রেসিডেন্সশিপ পেয়ে সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯৯৪ সালের ২০ জানুয়ারি অরুণ-নাউকো দম্পতির ঘর আলোকিত করে জন্ম নেয় একটি কন্যাসন্তান। পরিবারিক পদবির সঙ্গে মিলিয়ে তার নাম রাখা হয় প্রিয়াংকা ইউসিকা ঘোষ।
জাপানে বেড়ে ওঠা
[সম্পাদনা]প্রিয়াঙ্কা যখন জাপানে বড় হচ্ছিলেন তখন তার মিশ্র জাতিসত্ত্বার কারণে সবাই তাকে ডাকত “হাফু,” যার মানে আধা।
ছয় থেকে ৯ বছর বয়স পর্যন্ত প্রিয়াঙ্কা ক্যালিফোর্নিয়ার স্যাক্রামেন্টোতে বাস করেন। উনি কলকাতায় বাস করেন এক বছর তারপর জাপানে ফিরে যান যেখানে তাকে তার মিশ্র জাতিসত্ত্বার কারণে অনেক কটূক্তি শুনতে হয়।[৬]
জাপানে বেড়ে ওঠার সময় প্রিয়াঙ্কা শুধু হাতে গোনা কিছু মানুষ চিনতেন যারা ছিল মিশ্র জাতিসত্ত্বার।
“আমি যখন ক্লাস ফাইভে পড়ি,তখন দেখলাম ক্লাশে আমিই একমাত্র মিশ্র জাতিসত্ত্বার। আমি ভেবেছিলাম আমি স্বাভাবিক নই,” প্রিয়াঙ্কা বলেন।
তিনি বহু বছর তার মিশ্র জাতিসত্ত্বার কারণে হতাশায় ভুগেছেন, কিন্তু শেষে সিদ্ধান্ত নেন যে উনি এখন থেকে তার ভারতীয় পরিচয়ের জন্য গর্বিত হবেন।
কিছু মানুষ মিশ্র জাতির লোক পছন্দ করে না, কিন্তু তারপরও জাপানীরা এখন মিশ্র জাতিসত্ত্বার মানুষকে মেনে নিচ্ছেন।
মিস ওয়ার্ল্ড জাপান ২০১৬
[সম্পাদনা]৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ তারীখে প্রিয়াঙ্কা মিস ওয়ার্ল্ড জাপান ২০১৬ এর মুকুট বিজয়ী হন। ২০১৬ সালে উনি মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় অংশ নেন এবং প্রথম ২০ জনের স্থান লাভ করেন।[৭][৮]
ব্যক্তিগত জীবন
[সম্পাদনা]প্রিয়াঙ্কা বলিউড সিনেমার একজন ভক্ত এবং তিনি তার পথিকৃৎ হিসেবে বেছে নিয়েছেন ঐশ্বর্যা রায়কে যিনি ১৯৯৪ সালে মিস ওয়ার্ল্ড খেতাব পান, এবং সেই বছরই প্রিয়াঙ্কা জন্মগ্রহণ করেন।[৯]
প্রিয়াঙ্কা সাবলীলভাবে জাপানী, ইংরেজি এবং বাংলায় কথা বলতে পারেন। ২০১৬ সালে মিস ওয়ার্ল্ড জাপান জেতার আগে উনি অনুবাদক ও আর্ট থেরাপিস্ট হিসেবে কাজ করেন, এবং উনি একজন হাতির প্রশিক্ষকের লাইসেন্সধারী।
প্রিয়াঙ্কা জানান উনি কলকাতায় দুঃস্থ শিশুদের জন্য একটি আবাসন গড়তে চান।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Half-Indian Priyanka Yoshikawa Crowned Miss Japan"। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬।
- ↑ ক খ "Miss Japan won by half Indian Priyanka Yoshikawa"। BBC News। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬।
- ↑ কণ্ঠ, কালের। "বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত প্রিয়াংকাকে নিয়ে ভারতে মাতামাতি"। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬।
- ↑ Singh, Karan Deep (৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬)। "New Miss Japan Priyanka Yoshikawa on Her Indian Origins: I Thought I Wasn't Normal"। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬।
- ↑ "বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত প্রিয়াংকাকে নিয়ে ভারতে মাতামাতি"। কালের কন্ঠ। ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ২৪, ২০১৮।
- ↑ Times, Hindustan AFP (৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬)। "Half-Indian Priyanka Yoshikawa crowned Miss Japan, but not everyone's impressed"। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬।
- ↑ McCurry, Justin (৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬)। "'Haafu' and proud: Miss World Japan won by mixed-race contestant"। The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬।
- ↑ কণ্ঠ, কালের। "এবার মিস জাপান হলেন বাংলাদেশি কন্যা প্রিয়াঙ্কা - কালের কণ্ঠ"। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬।
- ↑ "New Miss Japan Priyanka Yoshikawa on Her Indian Origins: I Thought I Wasn't Normal"। The Wall Street Journal। সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ২৩, ২০১৮।