[go: nahoru, domu]

বিষয়বস্তুতে চলুন

রবিউল হক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রবিউল হক
মৃত্যু১৯৭১
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর প্রতীক

রবিউল হক (জন্ম: অজানা - মৃত্যু: ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাব প্রদান করে।[]

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

[সম্পাদনা]

রবিউল হকের জন্ম ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের উত্তর আনন্দপুর গ্রামে। তার বাবার নাম আমিনউল্লা মজুমদার এবং মা ছাবেদা খাতুন। তার স্ত্রীর নাম মেহের আফরোজ বেগম। তার এক ছেলে। []

কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

ইপিআরে চাকরি করতেন রবিউল হক। ১৯৭১ সালে কর্মরত ছিলেন ময়মনসিংহ ইপিআর সেক্টরের অধীনে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে যুদ্ধে যোগ দেন। প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে ২ নম্বর সেক্টরের রাজনগর সাব সেক্টরে যুদ্ধ করেন। বিলোনিয়া, পরশুরামসহ আরও কয়েক স্থানে সাহস ও বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

[সম্পাদনা]

১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে ফেনী জেলার পাঠাননগরে মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধারা বিলোনিয়া দখল করলে পাকিস্তানি সেনারা পাঠাননগরে সমবেত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণ করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল আক্রমণে পাকিস্তানি সেনারা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি শিকার করে পেছন দিকে পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় পাকিস্তানি সেনারা ফেলে যায় অসংখ্য গোলাবারুদ ও অস্ত্রশস্ত্র। মুক্তিযোদ্ধারা সেগুলো সংগ্রহ করে পাঠাননগরে তাদের ক্যাম্পে জমা করেন। ওদিকে পাকিস্তানি সেনাদের একাংশ পালিয়ে যায় চট্টগ্রামের দিকে। অপর দল যায় লাকসামের দিকে। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ধাওয়া করেন। আর অল্পসংখ্যক থেকে যান ক্যাম্প, অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ প্রহরায়। এই দলে ছিলেন রবিউল হক। মুক্ত এলাকায় নিজেদের ক্যাম্প প্রহরা দিচ্ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা রবিউল হক। তার সঙ্গে ছিলেন আরও কয়েকজন। ক্যাম্পের পাশেই রাখা ছিলো শত্রু পাকিস্তানি সেনাদের ফেলে যাওয়া বিপুল অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ। হঠাৎ তাদের ক্যাম্পের আশপাশে পড়তে থাকল গোলা। বিভ্রান্ত মুক্তিযোদ্ধারা বোঝার চেষ্টা করলেন কোন দিক থেকে গোলা আসছে। কিন্তু তার আগে নিজেদের জীবন বাঁচাতে হবে। তাই তারা দ্রুত নিরাপদ অবস্থানে যেতে থাকলেন। রবিউল হকও সেই চেষ্টা করলেন। কিন্তু ব্যর্থ হলেন। তার একদম কাছেই পড়ল একটি গোলা। স্প্লিন্টার এসে আঘাত হানল তার শরীরে। নিমিষেই জীবনপ্রদীপ নিভে গেল রবিউল হকের। ৬ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা ফেনী মুক্ত করেন। এরপর তারা অগ্রসর হন চট্টগ্রামের দিকে। এ সময় পলায়নরত পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত যুদ্ধ হয়। এসব যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনারা ব্যাপক হারে দূর ও স্বল্প পাল্লার কামানের গোলা নিক্ষেপ করে। একদিন সেসব গোলার কিছু এসে পড়ে পাঠাননগরে। এতে সেখানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। একটি গোলা এসে পড়ে রবিউল হকের একদম কাছে। বিস্ফোরিত গোলার স্প্লিন্টার সরাসরি আঘাত করে তার শরীরে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে শহীদ হন। পরে সহযোদ্ধারা রবিউল হকের মরদেহ পাঠিয়ে দেন তার গ্রামের বাড়িতে। সেখানে তাকে সমাহিত করা হয়। পাঠাননগরের কাছেই ছিল তার বাড়ি। তার সমাধি চিহ্নিত, তবে সংরক্ষিত নয়। []

পুরস্কার ও সম্মাননা

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না" | তারিখ: ০৭-০২-২০১২[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ২১৩। আইএসবিএন 9789843351449 
  3. একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা (দ্বিতীয় খন্ড)। ঢাকা: প্রথমা প্রকাশন। মার্চ ২০১৩। পৃষ্ঠা পৃ ৩১৪। আইএসবিএন 9789849025375 

পাদটীকা

[সম্পাদনা]

বহি:সংযোগ

[সম্পাদনা]